ঔষুধি গুনে সমৃদ্ধ কিসমিসের উপকারিতা -ও কিসমিসের পুষ্টিগুন

 
কিসমিসের উপকারিতা

ঔষুধি গুনে সমৃদ্ধ কিসমিসের উপকারিতা-ও কিসমিসের পুষ্টিগুন 

কিসমিসের উপকারিতা 

কিসমিসের উপকারিতা বলে অল্প কথায় শেষ করা যাবে না । কিসমিস ভেজানো পানিও আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী । ভিটামিন ,খনিজ ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ,ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ,পলিফেনলস,ফাইবার এর মত মূলবান উপাদান রয়েছে কিসমিসে । যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী । তাছাড়া কিসমিস আমাদের শরীরে শক্তি যোগায় এবং রক্ত উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে । শরীরে আয়রনের ঘাটতি দূর করার পশাপাশি রক্তে লাল কণিকার পরিমাণ বাডায় । তাছাড়াও কিসমিস ভিজানো পানি আমাদের শরীরের রক্তকে পরিষ্কার করে । কিসমিসের  পানি আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অ্যাসিডি দূর করে । আসুন নিচে থেকে কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানি ।  

ওজন বাড়াতে সাহায্য করে

সবাই ওজন কমাতে চান না । কেহ কেহ আবার ওজন বাড়াতে চান । যারা সুস্থভাবে  ওজন বাড়াতে চান তাদের জন্য কিসমিস হতে পারে একটি উত্তম বন্ধু । 

কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে 

কিসমিসের উপাকারিতা গুলোর মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য উপাকারিতা হলো এটি আমাদের দেহের কোষ্ঠ্যকাঠিন্য সমস্যা দূর করে । কেননা কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার । যা পরিপাকক্রিয়া দ্রূত সাহায্য করে । এতে করে  কোষ্ঠ্যকাঠিন্য  দূর হয় এবং খাবার সহজে হজম হয় । 

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে 

কিসমিসে থাকা পটাশিয়াম আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে । আমরা সাবাই জানি শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় সোডিয়াম রক্তচাপ বাডিয়ে দেয় । আর কিসমিসের উপকারিতা হলো এটি আমাদের দেহের সোডিয়াম এর মাত্রা ঠিক রাখে । 

রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে 

কিসমিস আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে । কেননা কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন । তাছাড়াও এতে থাকা খনিজগুলির সাথে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং পলিফেনলগুলির মতো আরো অন্যান্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে । এই সমস্থ উপাদান গুলো আমাদের ইমিউন সিস্টেম গঠন করে । 

হাড়কে মজবুত ও শক্ত রাখে 

কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমান ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড় ও দাঁত ভালো রাখে ।তাছাড়াও এতে রয়েছে বোরন নামক একটি উপাদান যা আমাদের দেহের হাড় গঠনে সঠিক ভাবে সাহায্য করে এবং ক্যালসিয়ামকে তাড়াতাড়ি শুষে নিতে সাহায্য করে । বোরন মেনোপজ ঘটে যাওয়া নারীদের মধ্যে অস্টিয়োপোরসিস এবং হাড় ও জয়েন্ট এর জন্য কিসমিস অনেক উপকারী । 

ঘুম ভালো হয় 

ঘুম আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ন । নিয়মিত ঘুম না হলে আমাদের শরীরে নানাবিধ সমস্যা দেখা যায় । শারীরিক অসুবিধার পাশাপাশি মানসিক অসুবিধা ও দেখা যায় । কিসমিস এই ক্ষত্রে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে । কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমান আয়রন । আর  এই আয়রন আমাদের ভালো ঘুমে সাহায্য করে । আর আমরা এটা সবাই জানি আয়রন আমাদের দেহের একটি গুরুত্বখনিজ  যা শুধুমাত্র হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বৃদ্ধি করে না বরং বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে । কিসমিস ভালো ঘুমের ব্যবস্থা করে  শরীর ও মেজাজ দুইটিকে শান্ত রাখে । 

 ক্যান্সার প্রতিরোধ করে

কিসমিসে প্রচুর পরমান ক্যাটেচিন নামক একধরণের অ্যান্টিওক্সিডান্ট থাকে । এই উপাদানটি আমাদের দেখে ভেসে বেড়ানো ফ্রি র‍্যাডিকলগুলিকে শেষ করে দেয় । এই ফ্রি র‍্যাডিকলগুলি আমাদের শরীরের ক্যান্সার কোষগুলো বৃদ্ধি করে । তাই নিয়মিত কিসমিস খেলে শরীরে ক্যাটেচিন এর মতন শক্তিশালী অ্যান্টিওক্সিড্যান্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় ,যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে । 

জ্বর সারতে সাহায্য করে 

কিসমিসে রয়েছে ফেনল ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যা অ্যান্টিব্যাক্টিরিয়াল এবং অ্যান্টিওক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য ব্যাকটেরিয়া এবং  ভাইরাল ইনফেকশানের জন্য হওয়া জ্বর কমাতে সাহায্য করে । 

দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় 

কিসমিসের উপকারিতা গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এটি । যারা চোখে কম দেখেন অর্থাৎ যাদের দৃষ্টিশক্তি কম তাদের জন্য কিসমিস একটি কার্যকারী উপাদান । কেননা কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে অধিকতর কার্যকর । 

যৌন সমস্যা প্রতিরোধ

কিসমিস বহুদিন ধরেই লিবিডো বর্ধনকারী হিসাবে ব্যবহার করা হয় । আর্জিনিন নামক একটি উপাদান পাওয়া যায় কিসমিসে ,যা স্পার্মের চলাচলে সাহায্য করে । পাশাপাশি গর্ভধারণেও সাহায্য করে । তাছাড়াও যাদের যৌন সহন শীলতা কম  তাদের জন্য কিসমিস হতে পারে একটি কার্যকারী উপাদান । নিয়মিত কিসমিস খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে । 

তবে অধিক পরিমাণ কিসমিস খেলে সমস্যা হতে পারে । যদিও কিসমিসের উপকারিতা অনেক । তাই এটি বেশি বেশি খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়েই খাওয়াই উত্তম । বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা । 

এখন আমরা জানবো কিসমিসের পুষ্টিগুন সম্পর্কে

কিসমিসের পুষ্টিগুন 

প্রতি ১০০ গ্রাম কিসমিসের পুষ্টিগুন রয়েছে ,এনার্জি ৩০৪ কিলোক্যালরি,কার্বোহাইড্রেট ৭৪.৬ গ্রাম ,ডায়েটরি ফাইবার ১.১ গ্রাম , ফ্যাট ০.৩ গ্রাম ,প্রোটিন ১.৮ গ্রাম ,ক্যালসিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম , আয়রন ৭.৭ মিলিগ্রাম ,সোডিয়াম ২০.৪ মিলিগ্রাম ,পটাশিয়াম ৭৮ মিলিগ্রাম । তাছাড়াও এটি শর্করার মাত্রায় কোন বাধা বা ঝামেলার সৃষ্টি করে না । এটি খেলে আমদের শরীরে দ্রুত রক্ত বৃদ্ধি পায় । 

Reactions

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ